Braking News

6/recent/ticker-posts

বাতিল হচ্ছে আলোচিত সেই গেজেট!



উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) কর্তৃত্ব বজায় রেখে প্রকাশিত ‘উপজেলা পরিষদ (হিসাব ও নিরীক্ষা) বিধিমালা, ২০১৬’ বাতিল হচ্ছে! প্রকৃচি ও বিসিএস সমন্বয় কমিটির ক্ষোভের কারণে এ পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, উপজেলা পরিষদে ন্যস্ত ৭টি বিভাগের সেলফ ড্রয়িং কর্মকর্তাদের বেতন ভাতা ও অন্যান্য বিলে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) স্বাক্ষর অযাচিত নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখে ১৩ মার্চ গেজেট প্রকাশ করা হয়। অথচ এর বিরুদ্ধে প্রকৌশলী, কৃষিবিদ, চিকিৎসক ও বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের ২৬টি ক্যাডার দীর্ঘদিন আন্দোলন করেছে। সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠকের পর বিষয়টির সুরাহা করা হয়।

প্রকৃচি ও বিসিএস সমন্বয় কমিটির এক নেতা নাম প্রকাশ না করে বলেন, নেতাদরে সঙ্গে নেয়া সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে তারা এই গেজেট করেছে। সেটি আমরা স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব আবদুল মালেককে জানিয়েছি। তিনি গেজেটটি বাতিলের নির্দেশনা দিয়েছেন। ১৩ মার্চের গেজেট বাতিল হওয়া এখন সময়ের ব্যাপার।

প্রকৃচি ও বিসিএস সমন্বয় কমিটি কর্মকর্তার সেলফ ড্রইং বেতন-ভাতাদি উত্তোলনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অযাচিত হস্তক্ষেপ বাতিলের দাবিতে জোরালো আন্দোলন গড়ে তোলে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এর সমাধান বের করতে নির্দেশনা দেন। এ ব্যাপারে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ, অর্থসচিব, স্থানীয় সরকার বিভাগ সচিব আবদুল মালেককে নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটি প্রকৃচি ও বিসিএস সমন্বয় কমিটির সঙ্গে বৈঠক করে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কর্তৃত্ব বাতিলের ব্যাপারে সম্মত হন। বৈঠকে ঐকমত্য হয়, সরকারের আর্থিক ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত বিদ্যমান আইন-বিধি মোতাবেক মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অফিস স্মারকটি সংশোধন করা হবে। প্রয়োজনে খসড়া প্রস্তুত করে পুনরায় বৈঠক করা হবে। এর পাশাপাশি উপজেলা পরিষদ আইন, ১৯৯৮ (২০১১ সালের ২১ নং আইন) ৩৩ অনুচ্ছেদ অধিকতর সংশোধন করা হবে। যাতে সব কর্মকর্তা আত্মমর্যাদা নিয়ে নিষ্ঠার সঙ্গে সরকারি দায়িত্ব পালন করতে পারেন।

গত বছরের ২১ অক্টোবর জাতীয় প্রেসক্লাবে প্রকৃচি-বিসিএস সমন্বয় কমিটির নেতারা বিভিন্ন দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছিলেন। উপজেলা পরিষদে ইউএনওর কর্তৃত্ব বাতিল করে জনপ্রতিনিধির ক্ষমতায়ন করার দাবি জানান সদস্য সচিব মো. ফিরোজ খান। এতে বক্তব্য রাখেন বিয়ামের মহাসচিব প্রফেসর ডা. এম. ইকবাল আর্সলান, কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটের মহাসচিব কৃষিবিদ মোবারক আলী, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মো. আবদুস সবুর ও স.ম গোলাম কিবরিয়া প্রমুখ।

একমাত্র প্রশাসন ক্যাডারের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠায় এই স্মারক জারি কর্মকর্তাদের জন্য চরম অবমাননাকর উল্লেখ করে ফিরোজ খান বলেন, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জারি করা উপজেলা পরিষদকে অধিকতর কার্যকর করার নামে পেশাদার ও কারিগরিসহ উন্নয়নমুখী দফতরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতনভাতা উত্তোলন, প্রকল্পের অর্থ বরাদ্দ তদারকিসহ সব ক্ষেত্রে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের অযৌক্তিক ও অযাচিত নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়েছে। এ সিদ্ধান্ত দেশের সব দফতরে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য চরম অবমাননাকর। ফলে মাঠ পর্যায়ে কর্মকর্তাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে।

সরকার শুধু একটি মাত্র প্রশাসন ক্যাডারের স্বার্থ দেখতে পারে না বলে তিনি বলেন, উপজেলা পর্যায়ে অনেক কর্মকর্তার মর্যাদা ও বেতন স্কেল উপজেলা নির্বাহী অফিসারের চেয়ে সিনিয়র। একজন জুনিয়র কর্মকর্তা দিয়ে সিনিয়র কর্মকর্তাকে নিয়ন্ত্রণ করা সরকারের প্রশাসনিক রীতির পরিপন্থী। এ ছাড়াও সেলফ ড্রয়িং অফিসারের বেতনভাতা বিল অন্য বিভাগের কর্মকর্তাদের দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করা বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল রুলসের পরিপন্থী।

Post a Comment

0 Comments