Braking News

6/recent/ticker-posts

প্রধানমন্ত্রী বরাবর প্যানেল শিক্ষকদের চিঠি



মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,
অাপনার প্রতি রইল আমাদের প্যানেল শিক্ষকদের পক্ষ থেকে হাজারও সালাম ও শুভেচ্ছা।
মাননীয় প্রাধানমন্ত্রী, যে কথাটি না বললেই নয়,
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিরক্ষরতামুক্ত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে ৩৭ হাজার স্কুলকে একযোগে সরকারীকরণ করেছিলেন। সে প্রত্যাশা পূরণে প্যানেল শিক্ষকরা তাদের অর্জিত জ্ঞান, মেধা ও সৃজনশীলতাকে কাজে লাগিয়ে প্রাথমিক শিক্ষার মান উন্নয়নে বৃহত্তর ভূমিক রাখবে বলে অাশা করি।
মাননীয় প্রাধানমন্ত্রী,
তারই যোগ্য উত্তরসূরি হিসেবে আপনি ২২ হাজার রেজিস্টার্ড বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কে একযোগে জাতীয়করন করেছেন।
মামনীয় প্রাধানমন্ত্রী, অসহায় প্যানেলভুক্ত শিক্ষকদের দুটি কথা শুনুন,
আপনি অবগত অাছেন যে, ২০১০ সালের ১১ এপ্রিল রেজিস্ট্রার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়ের (সদ্যজাতীয়করন প্রাথমিক) বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক শূন্য পদে শিক্ষক নিয়োগের জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। যাতে পার্বত্য চট্টগ্রামের তিনটি জেলা ছাড়া মোট ৬১টি জেলায় ৯ ডিসেম্বর ২০১১ সালে একযোগে সারা দেশে ‘শিক্ষক নিয়োগের নির্বাচনী পরীক্ষা’ অনুষ্ঠিত হয়। যাতে প্রায় ৮০০০০০ (আট লক্ষ) পরীক্ষার্থী অংশ গ্রহন করে। বাংলাদেশর ইতিহাসে এটা ছিল স্বচ্ছ নিয়োগ পরীক্ষা। ৮০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়। পরীক্ষার সময় ৮০ মিনিট। উত্তরদাতা প্রতিটি শুদ্ধ উত্তরের জন্য ১ নম্বর পাবে। প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য ০.২৫ নম্বর কাটা যাবে। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের মৌখিক পরীক্ষার জন্য ডাকা হয়। লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার চূড়ান্ত ফল ২০১২ সালের এপ্রিল মাসে প্রকাশ করা হয়। মোট উত্তীর্ণ প্রার্থী ৪২ হাজার ৬১১ জন। চূড়ান্ত ফলটি উপজেলাভিত্তিক মেধাক্রম অনুসারে প্রকাশিত হয়। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট থেকে জানা যায় যে, মেধা তালিকার সিরিয়াল অনুসারে নিয়োগ দেয়া হবে।
৪২ হাজার ৬১১ জন শিক্ষকদের মধ্য থেকে প্রথম দফায় প্রায় ১৬ হাজার শিক্ষককে নিয়োগ দেয়া হয়। কিন্তু মেধা তালিকার সিরিয়াল ভঙ্গ করে নিয়োগ দেয়ার কারণে প্রথম দিক থেকেও অনেকেই নিয়োগ পাননি। বাকী শিক্ষকরা অাজ পর্যন্ত নিয়োগ না পেয়ে চরম সংকটাপন্ন, হতাশাগ্রস্থ অবস্থায় দিন অতিবাহিত করছে।
অতীতের যে কোন সরকারের চেয়ে আপনার সরকারের শিক্ষাখাতে অতুলনীয় সাফল্য এনে দিয়েছে, তাই জ্ঞান ভিত্তিক শিক্ষিত সমাজ গঠনে প্যানেল শিক্ষকদের দ্রুত নিয়োগ দিয়ে দেশের সেবায় কাজ করার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য অাবেদন করছি।
আমরা প্যানেল শিক্ষরা আমাদের মেধা, মনন ও অর্জিত জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে বাংলাদেশকে উন্নত ও সমৃদ্ব দেশে উন্নতি করতে অামরা বদ্ধ পরিকর।
আমি শান্তিতে নোবেলজয়ী ভারতের সুপণ্ডিত কৈলাশ সতীর্থর একটি উক্তি উল্লেখ্য করতে চাই। তিনি বলেছেন, ‘শিক্ষায় বিনিয়োগের রিটার্ন নয়গুণ’। গুণগত শিক্ষার পাশাপাশি জ্ঞানভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে এ রির্টান অর্জন সম্ভব।
মামনীয় প্রাধানমন্ত্রী,
“ত্রিশ লাখ শহীদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশের গর্বিত উত্তরসূরী অামাদের প্যানেল শিক্ষকদের মধ্যে রযে়ছে। অার শিক্ষকদের কাছে জাতির প্রত্যাশা অনেক।
অামাদের ২৬০০০ প্যানেল শিক্ষককের চাওয়া বেশী কিছু না তাদের চাওয়া একটা তারা শিক্ষকের মর্যাদা নিয়ে বাচতে চায়। তাই দ্রুত নিয়োগের জন্য সংশি্লষ্ট সবাইকে নির্দশনা দেয়ার জন্য বিনীতভাবে অনুরোধ করছি।
আমার জানা মতে অনেক অসহায় ও দুস্থ পরিবারের যোগ্যতা সম্পন্ন শিক্ষক আছেন যারা তাদের জীবন যুদ্ধে পরাজিত হয়ে সকল কুল হারিয়ে এই চাকুরির অাশায় বেঁচে আছে। আবার এই প্যানেলে এমন অনেক অসহায়, দুস্থ, এতিম ও পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম লোক আছে যারা চাকুরির উপর নির্ভর করে খেয়ে পরে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখেছেন।
মাননীয় প্রাধানমন্ত্রী,
আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায়, মহামান্য হাইকোটের রায় ও আপিল বিভাগের রায়ের বাস্তবায়ন করে প্যানেল শিক্ষকদের নিয়োগের আদেশ দিয়ে ন্যায্য বিচার প্রতিষ্ঠা করতে বিনীতভাবে অাবেদন করছি। আপনি যদি খোজ নেন জানতে পারবেন দেশের বিবেকবান মানুষ প্রশ্ন করেন যে আপিল বিভাগের রায়ে মানুষের মৃত্যু কার্যকর হয় কিন্তু সমাজের সন্মানিত পেশার যোগ্যতা সম্পন্ন প্যানেল শিক্ষকদের চাকুরি হয়না কেন? আবার একই পরীক্ষায় কৃতকার্য হয়ে একই প্যানেলের কেউ নিয়োগ পাবে আবার কেউ নিয়োগ পাবেনা কেন? তাই আপনার কাছে অনুরোধ আপনার একটি ঘোষনা এই ২৬০০০ শিক্ষকের জীবন আলোকিত হতে পারে।
২৬০০০ শিক্ষকমন্ডলির পক্ষ থেকে আমাদের অনুরোধ, ২৬০০০শিক্ষকদের তাদের নায্য আধীকার দ্রুত নিয়োগ পত্র দিয়ে দিন।

Post a Comment

0 Comments