Braking News

6/recent/ticker-posts

অষ্টম পে স্কেলে আবার পরিবর্তন আনা হচ্ছে



কার্যকর হওয়া অষ্টম পে স্কেলে আবার পরিবর্তন আনা হচ্ছে। এর ফলে গত ১৫ ডিসেম্বর থেকে আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত যাদের ইনক্রিমেন্ট (বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি) পাওয়ার কথা, তারা এখন সেই ইনক্রিমেন্ট বেতনের সঙ্গে যুক্ত করতে পারবেন। নতুন বেতন কাঠামোর গেজেটে তাদের ইনক্রিমেন্ট বাতিল করার কথা বলা হলেও এখন নতুন করে আদেশ জারি করে তাদের ইনক্রিমেন্ট দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে সরকার।

আর নতুন কাঠামো অনুযায়ী, আগামী অর্থবছর থেকে ইনক্রিমেন্ট যাঁর যেদিনই পাওয়ার কথা হোক না কেন, সবাই একসঙ্গে ১ জুলাই তারিখে পাবেন। আগামী মার্চের প্রথম সপ্তাহের মধ্যেই এই সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করবে সরকার।এই প্রজ্ঞাপনে মাধ্যমে চাকরির বেতনে সুবিধা পাবেন প্রায় আট লক্ষ সরকারি চাকরিজীবীর। এছাড়া একই পদে আগে যোগ দিয়েও পরে যোগ দেওয়া কর্মকর্তা-কর্মচারীর চেয়ে আর জুনিয়র থাকতে হবে না তাদের।

অর্থ মন্ত্রণালয় ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তারা জানান, ১৫ ডিসেম্বর থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত যাদের ইনক্রিমেন্ট পাওয়ার কথা, সরকার তাদের ইনক্রিমেন্ট দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টি চূড়ান্ত করা হয়েছে। এ সংক্রান্ত একটি সারসংক্ষেপ চূড়ান্ত করে গত সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুমোদনের জন্য পাঠিয়েছে অর্থ বিভাগ। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন পাওয়ার পরই এ বিষয়ে গেজেট জারি করবে অর্থ বিভাগ।

সরকারি চাকরিতে যিনি যেদিন যোগ দেন, প্রতিবছর ওই দিন তিনি একটি করে ইনক্রিমেন্ট পাবেন– এমন হিসাবই এতোদিন চলছিল।চলতি অর্থবছরের ১ জুলাই থেকে গত ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত যাদের ইনক্রিমেন্ট পাওয়ার কথা ছিল, সবাই পেয়েছেন।

কিন্তু নতুন বেতন কাঠামোতে বলা হয়েছে, গত ১৪ ডিসেম্বরের পর থেকে আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত যাদের ইনক্রিমেন্ট পাওয়ার কথা, তারা আর ইনক্রিমেন্ট পাবেন না। যারা ইনক্রিমেন্ট পেয়েছেন, আর যারা পাবেন না, তাদের সবাইকে আগামী বছর থেকে প্রতিবছর ১ জুলাই ইনক্রিমেন্ট দেওয়া হবে। সরকারের এ সিদ্ধান্তের কারণে চাকরিজীবীদের প্রায় অর্ধেক ইনক্রিমেন্টবঞ্চিত হন। ফলে একই পদে বছরখানেক পরে যোগ দিয়েও অনেক জুনিয়র কর্মকর্তা-কর্মচারী এক বছর আগে যোগ দেওয়া সিনিয়রদের চেয়ে বেতন-ভাতায় সিনিয়র হয়ে যান। এ নিয়ে সমালোচনা ও ক্ষোভের কারণে অর্থ মন্ত্রণালয় ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এ সমস্যা দূর করার উদ্যোগ নেওয়া হয়।

অর্থ বিভাগের সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা জানান, আগের নিয়ম অনুযায়ী, সারা বছর ধরে প্রতিদিনই বিপুলসংখ্যক কর্মকর্তা-কর্মচারী ইনক্রিমেন্ট পেতেন। এতে সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন ব্যয় নিয়ে সরকারের হিসাব রাখা দুরূহ হয়ে পড়ে। এই বিবেচনায় ড. ফরাসউদ্দিনের নেতৃত্বাধীন জাতীয় বেতন ও চাকরি কমিশনের সুপারিশ ছিল প্রতিবছর ১ জুলাই সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট দেওয়ার। সচিব কমিটি ও মন্ত্রিসভাও এই প্রস্তাব অনুমোদন করে। তার পরিপ্রেক্ষিতে নতুন বেতন কাঠামোতে এই ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

ওই কর্মকর্তা বলেন, বেতন কাঠামোটি ৩০ জুন জারি করা গেলে আর কোনো সমস্যা হতো না। কিন্তু বেতন কাঠামোর গেজেট জারি হয়েছে ১৪ ডিসেম্বর। ফলে ১ জুলাই থেকে ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রায় অর্ধেক কর্মকর্তা-কর্মচারী ইনক্রিমেন্ট পেয়েছেন। অর্থ বিভাগ নতুন বেতন কাঠামো দেওয়ার সময় যারা ইনক্রিমেন্ট পেয়েছেন, তাদের ইনক্রিমেন্টের সমপরিমাণ অর্থ ফেরত নেওয়ার চিন্তা করেছিল। তবে চাকরিজীবীদের আপত্তির মুখে সরকার সে সিদ্ধান্ত থেকে ফিরে আসে। তাতে চাকরিজীবীদের অর্ধেক আবার ইনক্রিমেন্টবঞ্চিত হয়েছেন, যারা ১৫ ডিসেম্বর থেকে ৩০ জুনের মধ্যে চাকরিতে যোগ দিয়েছেন। তবে সরকার এখন তাদেরও ইনক্রিমেন্ট দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

অর্থ বিভাগের ঊর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তা জানান, সরকার আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত সবাইকে ইনক্রিমেন্ট দেওয়ার পর প্রতিবছর একই দিনে সবার ইনক্রিমেন্ট দেওয়ার প্রথা চালু করবে। এর অংশ হিসেবে আগামী ১ জুলাই সব চাকরিজীবী একটি করে ইনক্রিমেন্ট পাবেন। এতে চাকরিজীবীদের মধ্যে বৈষম্য দূর হবে।

Post a Comment

0 Comments