Braking News

6/recent/ticker-posts

অগ্রিম ইনক্রিমেন্ট দিয়ে সরকারি চাকুরেদের নতুন বেতন কাঠামো সংশোধন করা হচ্ছে


আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত অগ্রিম ইনক্রিমেন্ট দিয়ে সরকারি চাকুরেদের নতুন বেতন কাঠামো সংশোধন করা হচ্ছে। শীঘ্রই এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করবে অর্থবিভাগ। তবে নতুন বেতন কাঠামো সংশোধন করা হলেও টাইমস্কেল ও সিলেকশন গ্রেড আর পুনর্বহাল করা হচ্ছে না। আর তাই সাড়ে ছয় মাসের আগাম ইনক্রিমেন্টের সুযোগ নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে সরকারী চাকুরেদের। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্রে জানা গেছে, গত ১৫ ডিসেম্বর থেকে আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত যাদের ইনক্রিমেন্ট পাওয়ার কথা, কেবল তাদের ইনক্রিমেন্ট দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। নতুন বেতন কাঠামোর গেজেটে তাদের ইনক্রিমেন্ট বাতিল করার কথা বলা হলেও এখন নতুন করে প্রজ্ঞাপন জারি করে তাদের ইনক্রিমেন্ট দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

আর নতুন কাঠামো অনুযায়ী, আগামী অর্থবছর থেকে ইনক্রিমেন্ট যার যেদিনই পাওয়ার কথা হোক না কেন, সবাই একসঙ্গে ১ জুলাই তারিখে পাবেন। ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সঙ্গে আলোচনা করে এ সংক্রান্ত একটি সারসংক্ষেপ চূড়ান্ত করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন পাওয়ার অপেক্ষায় আছে অর্থ বিভাগ। আশা করা হচ্ছে, আগামী দু-একদিনের মধ্যে অনুমোদন মিলবে। এরপরই প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক উর্ধতন কর্মকর্তা বলেন, অগ্রিম ইনক্রিমেন্টের বিষয়টি চূড়ান্ত করা হয়েছে। আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত যাদের ইনক্রিমেন্ট পাওয়ার কথা তাদের গত ১৫ ডিসেম্বর থেকে ইনক্রিমেন্ট দেয়া হচ্ছে। ৩০ জুন পর্যন্ত সবাইকে ইনক্রিমেন্ট দেয়ার পর প্রতিবছর একই দিনে সবার ইনক্রিমেন্ট দেয়ার প্রথা চালু করবে। এর অংশ হিসেবে আগামী ১ জুলাই সব চাকরিজীবী একটি করে ইনক্রিমেন্ট পাবেন। এতে চাকরিজীবীদের মধ্যে বৈষম্য দূর হবে। নতুন বেতন কাঠামোতে এ ধরনের একটি সংশোধনী দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।

তিনি বলেন, টাইমস্কেল ও সিলেকশন গ্রেডের বিষয়টি পুনর্বহাল হচ্ছে না। যদিও এই দুটি বিষয় পুনর্বহালে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একটি অংশ দাবি জানিয়ে আসছে।

জানা গেছে, সারা বছর এবং প্রতিদিনই বিপুলসংখ্যক সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ইনক্রিমেন্ট পেতেন। এতে সরকারী চাকরিজীবীদের বেতন ব্যয় নিয়ে সরকারের হিসাব রাখা দুরূহ হয়ে পড়ে। এই বিবেচনায় ড. ফরাসউদ্দিনের নেতৃত্বাধীন জাতীয় বেতন ও চাকরি কমিশনের সুপারিশ ছিল প্রতিবছর ১ জুলাই সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট দেয়ার। ইতোমধ্যে সচিব কমিটি ও মন্ত্রিসভাও এই প্রস্তাব অনুমোদন করে। তার পরিপ্রেক্ষিতে নতুন বেতন কাঠামোতে এ ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

এদিকে ইনক্রিমেন্ট বৃদ্ধির মাধ্যমে সিলেকশন গ্রেড ও টাইমস্কেল সুবিধা বাতিলের ক্ষতি পোষাতে চাইলেও বাস্তবে তা সম্ভব নয় বলে মনে করছেন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিভিন্ন সংগঠন। এরই মধ্যে প্রশাসন ক্যাডার বেশি সুবিধা পাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে অন্যান্য ক্যাডারের পক্ষ থেকে।

সরকারি চাকরিজীবীদের বিদ্যমান সিলেকশন গ্রেড ও টাইমস্কেল বাতিলের জন্য ফরাসউদ্দিন কমিশন প্রথম সুপারিশ করে। যদিও কমিশনের প্রতিবেদনে এই বাতিলের সঙ্গে বেতনকাঠামোর ধাপ ২০ থেকে ১৬-তে নামিয়ে আনার সুপারিশ ছিল। একটি বাস্তবায়ন করে আরেকটি না করায় অসঙ্গতি তৈরি হয়েছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে টাইমস্কেল ও সিলেকশন গ্রেডের বিকল্প সুবিধা হিসেবে সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে একটি সারসংক্ষেপ তৈরি করে চারটি প্রস্তাবনা দেয়া হয়েছিল। ওই প্রস্তাবে বলা হয়েছিল-নির্ধারিত একটি সময় অন্তর নবম থেকে তদুর্ধ চতুর্থ গ্রেডের কর্মকর্তাদের বেতন স্কেল স্বয়ংক্রিয়ভাবে এক ধাপ ওপরে উঠার বিধান রাখা হয়েছে। পাশাপাশি কর্মচারীদের চাকরি জীবনে দুটি পদোন্নতির সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। অর্থাৎ কর্মচারীদের চাকরির মেয়াদ ১০ বছর পূর্ণ হওয়ার পরপরই বেতন গ্রেড স্বয়ংক্রিয়ভাবে উপরে উঠবে এক ধাপ। এর ছয় বছর পর অর্থাৎ চাকরির মেয়াদ ১৬ বছর পূর্ণ হলে সংশ্লিষ্ট কর্মচারীর গ্রেড আরেকবার এক ধাপ উপরে উঠবে। এছাড়া সিনিয়র সচিবদের সমান বেতন নির্ধারণ করা হতে পারে জাতীয় অধ্যাপকদের জন্য। এর মধ্যে প্রধানমন্ত্রী একটি প্রস্তাবের পক্ষে অনুমোদন দিয়ে বাকিগুলো পর্যালোচনা করে সমাধানের নির্দেশনা প্রদান করেন।

প্রসঙ্গত, গত ৭ সেপ্টেম্বর মন্ত্রিসভার বৈঠকে অষ্টম জাতীয় বেতন স্কেল অনুমোদন করা হয়। আর গত ১৫ ডিসেম্বর মধ্যরাতে এই বেতন কাঠামোর গেজেট প্রকাশ করে অর্থ মন্ত্রণালয়। সূত্র: দৈনিক জনকণ্ঠ।

Post a Comment

0 Comments