Braking News

6/recent/ticker-posts

স্কুল স্থাপনের ১০ শর্ত: নীতিমালা জারি

এখন থেকে ১০টি শর্ত পূরণ করলেই মিলবে ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপনের অনুমতি। দুদফায় এই কটি শর্ত জুড়ে দিয়ে ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত বিদ্যালয় স্থাপন, চালু ও স্বীকৃতি প্রদানের নীতিমালা জারি করছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
মঙ্গলবার জারি হওয়া নীতিমালায় বলা হয়েছে, প্রাথমিক অনুমতি না পেয়ে ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণির কোনো বিদ্যালয় স্থাপন করা যাবে না। স্বীকৃতি পাওয়ার পর সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে উন্নয়ন প্রকল্পভুক্তি অথবা আর্থিক অনুদান অথবা বেতনের সরকারি অংশ দেয়ার দায়ভার সরকারের ওপর বর্তাবে না। তবে ছিটমহল এলাকায় বিদ্যালয় স্থাপনে অগ্রাধিকার কিংবা ছিটমহলসহ অনগ্রসর এলাকায় মন্ত্রণালয় বিদ্যালয় স্থাপন করে দিতে পারবে। আর স্বীকৃতি পাওয়ার ৫ বছরের মধ্যে প্রশিক্ষণবিহীন শিক্ষক/শিক্ষিকাদের অবশ্যই পেশাগত প্রশিক্ষণ নিতে হবে। শর্তের ব্যত্যয় ঘটলে যে কোনো সময় স্বীকৃতি বাতিল করতে পারবে মন্ত্রণালয়। এতদিন এসব বিদ্যালয় স্থাপনের অনুমতি দিত শিক্ষা মন্ত্রণালয়। কিন্তু জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ অনুযায়ী দেশের প্রাথমিক শিক্ষা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত করা হয়েছে। এ জন্য অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার দেখভাল করবে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। ইতোমধ্যে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার নথিপত্র সব প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে হস্তান্তর করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এরই আলোকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত বিদ্যালয় স্থাপনের নীতিমালা প্রণয়ন করল। এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিব বলেন, নীতিমালাটি আজকালের মধ্যে দেশের সব জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে
পাঠানো হবে। বিদ্যালয়ের অনুমতি নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রথমেই জেলা পর্যায়ে প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে আবেদন করতে হবে। তিনি বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে যে নথিগুলো প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে তাতে দেখা গেছে, ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত বিদ্যালয় স্থাপনের জন্য ৩৭১টি আবেদন রয়েছে। এখন এই আবেদনগুলো নিষ্পত্তি করা হবে বলে তিনি জানান।
নীতিমালার প্রথম দফার শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে- বিদ্যালয় স্থাপনের জন্য উদ্যোক্তাকে প্রথমেই ৩০০ টাকার নন জুডিসিয়াল স্টাম্পে অঙ্গীকার দিয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার বরাবর আবেদন করতে হবে। তিনি আবেদনের প্রাপ্তি স্বীকার করে সর্বোচ্চ ২৫ দিনের মধ্যে তা ঢাকায় বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ইউনিটের মহাপরিচালকের দপ্তরে পাঠিয়ে দেবেন। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার প্রস্তাব পাওয়ার ৬০ কর্মদিবসের মধ্যে ইউনিটের সহকারী পরিচালক পদমর্যাদার কর্মকর্তার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের স্থানসহ বিভিন্ন কাগজপত্র পরীক্ষা করাসহ সরজমিন পরিদর্শন শেষে বিদ্যালয় চালুর প্রাথমিক অনুমতি দেয়া অথবা প্রত্যাখ্যান-সংক্রান্ত রিপোর্ট ইউনিটের মহাপরিচালক বরাবর দাখিল করতে হবে। ৬০ দিনের মধ্যে এ কাজগুলো না হলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ইউনিটের কর্মকর্তার মাধ্যমে দাখিল হওয়া প্রতিবেদনটি মহাপরিচালক প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাবেন। অনুমতি পাওয়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রথম পর্যায়ে অন্তত ৩ বছর মেয়াদে পাঠদানের অনুমতি দেয়া হবে। প্রাথমিকভাবে পাওয়া এই অনুমতিকে পাঠদানের স্বীকৃতি বলে গণ্য করা যাবে না। এই ৩ বছরের মধ্যে প্রাথমিক অনুমতি পাওয়া বিদ্যালয়গুলোকে শিক্ষার মান অর্জনের জন্য আরো ৫টি শর্ত পূরণ করতে হবে, যা দ্বিতীয় দফার শর্ত নামে পরিচিত।
দ্বিতীয় দফার শর্তগুলো হচ্ছে -স্বীকৃতি বা নিবন্ধন পাওয়ার জন্য প্রতিষ্ঠানকে কমপক্ষে একবার অষ্টম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের অংশ নিতে হবে। অধ্যয়নরতদের ন্যূনতম ৭৫ ভাগ শিক্ষার্থীকে অষ্টম শ্রেণি শেষে সমাপনী পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে এবং সেখান থেকে কমপক্ষে ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীকে এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। ৩ বছর মেয়াদি প্রাথমিক অনুমতির মেয়াদ শেষে সমাপনী পরীক্ষার ফলাফল, বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ভর্তির হার, শ্রেণিকক্ষে উপস্থিতি ও বার্ষিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা ও শিক্ষা সমাপনী চক্রের হার এবং বিদ্যালয়ে ‘আইটি’ ব্যবহার ইত্যাদি বিবেচনা করে ৫ বছরের জন্য অস্থায়ী স্বীকৃতি দেয়া হবে। পরবর্তী সময়ে একইভাবে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির হার, সমাপনী ও বার্ষিক পরীক্ষার ফলাফল এবং উদ্ভাবনী চর্চা অর্থাৎ বিদ্যালয়ের সার্বিক কর্মকৃতি (পারফরমেন্স) বিবেচনায় নিয়ে প্রতি ৫ বছর অন্তর অস্থায়ী স্বীকৃতি নবায়ন করতে হবে এবং এ ধারা অব্যাহত থাকবে বলে নীতিমালা বলা হয়েছ

Post a Comment

0 Comments