Type Here to Get Search Results !

Popcash

সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অসন্তোষ ঠেকাতে টাইম স্কেল

সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অসন্তোষ ঠেকাতে টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে সরকারি চাকরিজীবীদের সংশোধিত পে-স্কেল নিয়ে কাজ করছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রিসভার আগামী বৈঠকেই তা অনুমোদনের জন্য পেশ করার সম্ভাবনা রয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে। মন্ত্রিসভার অনুমোদনের পর পরই বেতন কাঠামোটি (পে-স্কেল) রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে গেজেট আকারে জারি করা হবে। ১ জুলাই থেকে নতুন কাঠামোতে বেতনের টাকা গুণবেন সরকারি চাকুরেরা।
প্রস্তাবিত জাতীয় বেতন কাঠামো থেকে টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড বাদ দেয়ায় সচিবালয়সহ সারা দেশের সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে অসন্তোষের সৃষ্টি হয়। গুরুত্বপূর্ণ সরকারি দফতরের কর্মকর্তা-কর্মচারী সংগঠনগুলোর (নন-ক্যাডার) পক্ষ থেকে এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানো হয়। একই সঙ্গে বেশ কয়েকজন সিনিয়র মন্ত্রী ও বেতন পর্যালোচনা কমিটির সভাপতির সঙ্গে দেখা করে তারা তাদের অসন্তোষের কথা জানিয়েছেন। দীর্ঘদিন থেকে চলে আসা এই টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড প্রত্যাহার করা হলে সরকারি কর্মচারী অঙ্গনে অসন্তোষ সৃষ্টিসহ যেকোনো ধরনের অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। সে কারণেই পর্যায়ক্রমে টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড রাখার কথা বিবেচনা করছে।
প্রসঙ্গত, টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড বাদ দিয়েই সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য নতুন বেতন কাঠামো চূড়ান্ত করে বেতন কমিশন পর্যালোচনা কমিটি। সম্প্রতি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের কাছে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে সচিবালয়সহ বিভিন্ন সরকারি দফতরে কর্মচারীদের মধ্যে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যায়।
সরকারি বিধিমালায় টাইম স্কেলের ব্যাপারে বলা হয়েছে, কোনো চাকরিজীবী ১৫ বছরেও কোনো কারণে পদোন্নতি না পেলে সে ক্ষেত্রে আট বছর পর একটি, ১২ বছর পর একটি এবং ১৫ বছর পর আরো একটি করে মোট তিনটি টাইম স্কেল পাবেন। প্রতিটি টাইম স্কেল পাওয়ার পর সংশ্লিষ্ট চাকরিজীবীর বেতন স্কেল এক ধাপ ওপরে উন্নীত হয়। এতে করে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারী পদোন্নতি না পেলেও আর্থিক সুবিধা পেয়ে থাকেন। বিশেষ করে সরকারি চাকরির ৬৫ শতাংশই ব্লকপোস্ট রয়েছে। যাদের পদোন্নতি পাওয়ার সুযোগ নেই। তারাই মূলত এর সুবিধাভোগী। ১৯৮১ সালে ক্যাডার সার্ভিসে টাইম স্কেল চালু হলেও ১৯৮৩ সালে তা নন-ক্যাডার পদেও চালু হয়। সিলেকশন গ্রেডের ব্যাপারে বিধিমালায় বলা হয়েছে, পদ না থাকা বা ভিন্ন কোনো কারণে একই স্কেলে সন্তোষজনকভাবে দীর্ঘদিন চাকরির পর অনেকে পদোন্নতি পান না। এ ধরনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে নির্বাচিত কিছু ব্যক্তিকে কিছু শর্তসাপেক্ষে উচ্চতর স্কেল প্রদান করা হয়। এ পদ্ধতিকে সিলেকশন গ্রেড বলা হয়। সত্তর দশকে এ পদ্ধতি চালু হয়।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদের মহাসচিব মো. রুহুল আমীন বলেন, বর্তমানের সিদ্ধান্ত নেয়াটা খুব ভালো হয়েছে। টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড বাদ দিলে সচিবালয়সহ সারা দেশে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে অসন্তোষের সৃষ্টি হবে। সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হবে।
এদিকে বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের সভাপতি নিজামুল ইসলাম ভূইঞা মিলন জানিয়েছেন, কর্মচারীদের বাদ দিয়ে কর্মকর্তাদের টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড দিলে তা সরকারে জন্য আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত হবে। এ নিয়ে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হবে। অর্থ ভিাগের কর্মকর্তারা জানান, ২০০৯ সালের বেতন কাঠামোর তুলনায় নতুন কাঠামোতে বেতনের পরিমাণ দ্বিগুণ হলেও চূড়ান্ত বিচারে এখন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যা পাচ্ছেন, এরচেয়ে ৬০ শতাংশ বাড়বে।

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.